শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে খালেদা জিয়া বুকে ব্যথা অনুভব করছেন বলে তার সহকর্মীদের জানিয়েছেন। তার কার্যালয়ে বিদ্যুৎ, ডিস সংযোগ ও টেলিফোন সংযোগ বন্ধ করে দেয়ায় খালেদা জিয়া মানুষিক অস্থিরতায় ভোগছিলেন। সম্ভবত সেই টেনশন থেকেই তার বুকের ব্যাথা শুরু হয়ে থাকতে পারে।
তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আলী আহসান জানিয়েছেন, তিনি কিছুতেই খালেদার কার্যালয়ে যেতে পারবেন না। কেন পারবেন না তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
অন্য দুয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তারাও খালেদার কার্যালয়ে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে সরকার দলীয় সাবেক এমপি জয়নাল হাজারী সম্পাদিত দৈনিক ‘হাজারিকা প্রতিদিন’ পত্রিকায়।
“খালেদার বুকে ব্যাথা, ডাক্তার যাচ্ছে না” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিতে বলা হয়, দু’ একদিনের মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, শিমুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে হুমকি দিয়ে আগেই সেখানে না যাওয়ার ব্যাপারে বলে দেয়া হয়েছে। অন্য ডাক্তাররা নিজ থেকেই খানিকটা ভয়ে সেখানে যেতে রাজি হচ্ছে না।
এদিকে খালেদাকেও নিজ উদ্যোগে হসপিটালে যেতে দেয়া হবে না বলে মনে হচ্ছে। এমতবস্থায় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। খালেদার ব্যাপারে সবচাইতে খারাপ খবরটি যদি প্রচার হয় তবে সঙ্গে সঙ্গেই দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আপাতত পরীক্ষার লক্ষ্যণ থাকলেও পরীক্ষা পেছাতেই হবে।
এর আগে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনাকে সরকারের ‘নিকৃষ্ট নিষ্ঠুর আচরণ বলে অভিহিত করে পুত্রশোকে আছন্ন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এর প্রতিক্রিয়া জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমি স্তম্ভিত।’
এদিকে গত শনিবার বিকালে গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান জানান, কার্যালয়ে উপস্থিত নেতা কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-চারিতায় বেগম জিয়া এমন অনুভুতি ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘গত কাল রাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার পর বেগম জিয়া কিশোরী দুই নাতনিকে নিয়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছেন, এটা সরকারের নিকৃষ্ট ধরণের নিষ্ঠুর আচরণ। এর প্রতিক্রিয়া জানানোর কোনো ভাষা আমার নেই। আমি স্তম্ভিত’
খালেদা জিয়া বলেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ সকল ইউটিলিটি সেবা বন্ধ করে দেয়া একটা নজিরবিহীন ব্যাপার ও শিষ্ঠাচার বর্হিভুত আচরণ। কোনো সভ্য সরকার এরকম আচরণ করতে পারে না। সভ্য জগতে এটা কল্পনাতীত’।
বিনা নোটিশের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেয়াকে আইন পরিপন্থি অভিহিত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।’
গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে গুলশানের নিজের বাসায় বালুর ট্রাক রেখে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা উল্লেখ করে বেগম জিয়া বলেছেন, ‘২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বরের আগে আমার বাসাকে ঘিরে যা ঘটানো হয়েছিল, এবার আমার কার্যালয়কে ঘিরে তার চেয়েও নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত সরকার স্থাপন করেছে।’
এদিকে সকাল ১১ দিকে ইন্টারনেট, ডিশ এবং টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা সামসুদ্দিন দিদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।