৫২ জাতীয় ডেস্ক।।
বিগত এক মাস যাবৎ দেশে নজিরবিহীন যে রাজনৈতিক সহিংসতা-অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে তা মোকাবেলায় শেখ হাসিনা সরকারের পাশেই থাকতে চায় ভারত সরকার। সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের সরকার দলীয় বিজেপি দলের প্রথম সারির নেতারা। বৃহস্পতিবার বিবিসির করা এক প্রতিবেদনে এমনটাই উঠে এসেছে।
বিজেপি নেতারা বলছে, শেখ হাসিনার মতো ‘পরীক্ষিত বন্ধু’র পাশ থেকে সরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে একান্ত আলোচনায় তারা এটাও স্বীকার করছেন, বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ আছে কিন্তু সেটা স্বাভাবিক রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরে কিছু নয়।
বাংলাদেশে গত বছরের ৫ জানুয়ারির যে বিতর্কিত নির্বাচনের বর্ষপূর্তি থেকে সে দেশে বর্তমান সঙ্কটের শুরু, সেই নির্বাচনকে বলিষ্ঠভাবে সমর্থন করেছিল প্রতিবেশী ভারত। তার কয়েক মাসের মধ্যে খোদ ভারতেই ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে কিন্তু কংগ্রেসকে হঠিয়ে যারা দিল্লির ক্ষমতায় এসেছে সেই বিজেপি নেতৃত্বও শেখ হাসিনার ওপর পুরোপুরি ভরসা রাখতে রাজি বলেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিং, একরকমটাই স্বীকারও করে নিয়ে বলছেন, ভারতের সম্পর্কটা যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে, তারপরও কোন দল সেখানে ক্ষমতায় সেটাও কিন্তু একটা ফ্যাক্টর। আর সে দিক থেকে বলতেই হবে, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের স্বার্থের প্রতি, আমাদের উদ্বেগের প্রতি দারুণ বিবেচনা দেখিয়েছেন।
শেখ হাসিনার ব্যাপারে ভারতের মোটেই কোন ধৈর্যচ্যুতি হয়নি বলে যুক্ত দেখিয়ে বিজেপি নেতারা বলছে, গণতন্ত্রের ওপর আস্থা রাখতে গেলে শেখ হাসিনাই কিন্তু আমাদের একমাত্র অপশন কারণ ভারত মনে করে তিনি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারের প্রধান!
বাংলাদেশের এই মুহুর্তের রাজনৈতিক সঙ্কট যে তাদের কপালেও ভাঁজ ফেলছেনা তা নয়। বিজেপির পক্ষ থেকে তাদের জাতীয় মুখপাত্র এম জে আকবর বলেন, ভারত চায় সেখানে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক কিন্তু তার জন্য ভারত আদৌ কোনও হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয়।
এম জে আকবর বলছেন, আমরা সব সময় চাই আমাদের দেশে ও প্রতিবেশী দেশে শান্তি থাকুক। কিন্তু প্রতিবেশী দেশে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠলেও সেখানে নাক গলানো বা হস্তক্ষেপ করাটা কিন্তু ভারতের নীতি নয়। সেটা ভারত কখনও করেনি, করবেও না।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মুহুর্তে বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেও বিজেপর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা কিন্তু স্বীকার করছেন, সে দেশে পরিস্থিতির দিকে তাদের সতর্ক নজর আছে, এমন কী বিরোধী দল বিএনপি-র সঙ্গেও গত আট মাসে ধীরে ধীরে তাদের একটা রাজনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
বিবিসি বলছে, বিগত ইউপিএ আমলে বিএনপির সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ একরকম থেমেই গিয়েছিল, সেটা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। তবে প্রসঙ্গটা এমনই স্পর্শকাতর, যে বিজেপি নেতারা বিএনপির সঙ্গে তাদের সম্পর্কর বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও চান না আবার অস্বীকারও করতে পারছেন না।
তবে, বাংলাদেশের এমন রাজনৈতিক সঙ্কটকালে বিজেপি নেতারাও জোর দিচ্ছেন সংলাপের ওপরই। তারা বলছেন, বাংলাদেশ সঙ্কটের সমাধান খুঁজতে হবে গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যেই তার অর্থ যেভাবেই করা হোক না কেন।