৫২ রাজনীতি ডেস্ক।।
ভোলা ১ আসনে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলে ভোলাকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেছেন ছাত্রলীগ এর এক সময়ের ত্যাগী নেতা হেমায়েত উদ্দিন।আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভোলা ১ নির্বাচনী আসনে তাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করলে ভোলায় দুইটি উপ-শহর তৈরী করবেন বলে তিনি জানান।
জেলে সম্প্রদায়ের সুবিধা নিশ্চিত করা:জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম নিউজ চ্যানেল ৫২ এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভোলা যেহেতু দ্বীপাঞ্চল সে ক্ষেত্রে ভোলার অধিকাংশ মানুষ জেলে সমপ্রদায়ের।তারা দিন-রাত মাছের সন্ধানে নদীতে সময় পার করে, বিভিন্ন সময় জলদস্যুরা তাদের উপর আক্রমণ করে।তাদের উপর জলদস্যুদের আক্রমণ বন্ধ করতে নৌ-পুলিশের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,ভোলার জনগণ এখন পারিবারিক রাজনীতির শিকার ।তারা তাদের ন্যায্য অধিকার ভোগ করতে পারছেননা। কৃষক -জেলে,খেটে খাওয়া মানুষ তাদের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছে । হেমায়েত উদ্দিন বলেন, জেলেদের জন্য জীবন বীমা সুবিধা তৈরী করবো যার সুবিধা জেলে পরিবার ভোগ করতে পারবে।বেশিরভাগ সময় জেলেরা যখন মৃত্যু বরণ করেন তখন তাদের অভাবের সংসারে অভাবের তীব্রতা বেড়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা জলদস্যুদের আক্রমণে মৃত্যুবরণকারী জেলে পরিবারে জীবন বীমা অত্যন্ত প্রয়াজন।জেলেদের সুবিধার্থে জীবন বীমা সেবা প্রদান করা আমার অন্যতম উদ্দেশ্য।
কৃষকদের সুবিধা নিশ্চিত করা:কৃষকদের জীবনযাত্রা ও পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া সহ কৃষকদের অসুবিধা গুলো বাছাই করে সে অনুযায়ী তাদের সুবিধা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি টুডে টাইমসকে জানান, কৃষকদের পণ্য মজুত রাখার জন্য সরকারী কোন হিমাগার ভোলা ১ আসনে নেই। তবে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হিমাগার রয়েছে যার ব্যয় নিম্ন আয়ের কৃষকদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন হিমাগারটি কৃষকদের উপকারের বদলে ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে । কৃষকরা যে সকল কৃষি উপাদান,আলু,ভুট্টা,তরমুজ যা কিছুই উৎপাদন করেন সেসকল কৃষিপণ্য হিমাগারটিতে রাখা হলে বেশি টাকা আদায় করে কতৃপক্ষ। কখনো যদি কতৃপক্ষের অবহেলার কারণে কৃষকদের কষ্টে উৎপাদিত পণ্যের ক্ষতি হয় তার দায়ভার উল্টো কৃষকদের ই বহন করতে হয়। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সরকারী অর্থায়নে একটি হিমাগার তৈরী করার কথা জানান আওয়ামী লীগ নেতা হেমায়েত উদ্দিন।
বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও শিল্প-কারখানা তৈরী: ভোলা ১ আসনের বেকার সমস্যা দূর করতে শিল্পকারখানা তৈরীর কথা জানিয়ে হেমায়েত উদ্দিন বলেন, একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে শিল্প এলাকা হিসেবে তৈরী করবো।এমন একটি জায়গায় শিল্প এলাকা তৈরী করা হবে যে স্থান থেকে সকল পথে যানবাহন অনায়াসে যাতায়াত করতে পারে। নৌ-পথ ও স্থল পথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ হবে এমন একটি জায়গাকে শিল্প এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। শিল্প এলাকায় গড়ে উঠা কল-কারখানায় কাজ করে মানুষ তাদের বেকারত্বকে দূর করতে পারবে।
রাজনৈতিক জীবনে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার : ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন হেমায়েত উদ্দিন।১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৯০ সালে প্রথমশ্রেনীতে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ১৯৯০-১৯৯১ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেসময় তিনি তার বাবার রাজনৈতিক আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন।
১৯৯৪ সালে সূর্যসেন হলের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে হরতালের সমর্থনে রাজপথে নামার পর রাষ্ট্রোদ্রহী মামলার আসামী হন তিনি। এরপর পুলিশের ভয়ে পলাতক হয়ে অনাহারে পায়ে হেঁটে ঘুরেছেন দিক বেদিক। তিনি বলেন , ব্যপক অর্থে কষ্টে দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছি ।সেসময় আমার এক ভাই তার ধানমন্ডির ১৫ নাম্বারের বাসায় আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলো। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামী হয়ে প্রায় দু’বছর পলাতক থাকার পর ১৯৯৬ সালে তিনি গ্রেফতার হন। ২০০২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৪ সালে হরতালের সমর্থনে মাঠে নামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের সামনে পুলিশের বেধরক লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও পরে সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। হেমায়েত উদ্দিন বলেন ,সেসময় তার চিকিৎসার সকল ব্যয় বহন করেছেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তার পায়ের একটি ক্ষতবিক্ষত আঙ্গুল দেখিয়ে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে শাহবাগে আমি ফের পুলিশের নির্যাতনের শিকার হই এবং সেসময় পুলিশের বন্দুকের নলের আঘাতে আমার পায়ের আঙ্গুলটি অকেজো হয়ে পড়ে।
তার উপর নির্যাতনের কথা উল্ল্যেখ করে হেমায়েত উদ্দিন বলেন, আমি জনগণের জন্য নানা অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূূমিকা পালন করেছি।আমি সবসময় জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই,জনগণের সকল নাগরীক সুবিধা নিশ্চিত করাই আমার রাজনৈতিক জীবনের সফলতা। ভোলার সাধারণ মানুষ তাদের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তরুণদের মাধ্যমে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন সে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচনে তিনি আমাকে ভোলা ১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রদান করলে আমি জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবো।