দেশের বর্তমান সঙ্কট সমাধানের জন্য প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন। বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল তিনি টেলিফোনে এএফপিকে ওই সাক্ষাতকার দেন। এক মাসেরও বেশি সময় নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় এটাই কোন পশ্চিমা মিডিয়াকে দেয়া তার প্রথম সাক্ষাতকার।
এএফপিকে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বিবেক বোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ জানেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের একটিই মাত্র পথ আছে। তা হলো সবার অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও অর্থপূর্ণ নির্বাচন। তিনি বলেন, যত দ্রুত তা আয়োজন করা হবে ততই তা সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে। বিলম্ব করা হলে সঙ্কট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।মানবজমিন অনলাইন সাক্ষাতকারটি প্রকাশ করে।
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আর এ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ জন্য তিনি যে প্রস্তাব দিয়েছেন এর আগে, সে বিষয়ে কোন সাড়া পাননি।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে আলোচনার মাধ্যমে ও সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। আমরা সেটাই চেয়েছি। সব দলের জন্য যাতে সমান ক্ষেত্র (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরি হয় সে জন্য আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও নির্বাচনী আইন নিয়ে কিছু সিদ্ধান্তে আসতে হবে। কিছুদিন আগে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্ত তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোন সাড়া পাইনি।
উল্লেখ্য, গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশানে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। খালেদা জিয়া সড়ক অবরোধের ডাক দেয়ার পর বেশির ভাগ মানুষ মারা গেছেন বোমা হামলায়। পেট্রল বোমা হামলার জন্য খালেদা জিয়া ওই সাক্ষাতকারে দায়ী করেন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে।
তিনি বলেন, এসব সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে। আমরা খবরের কাগজে পড়েছি, কিভাবে আওয়ামী লীগ অফিসে পাওয়া গেছে পেট্রল বোমা।
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, এ বছরের শুরু থেকে বিরোধী দলের ১৮ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার তার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন বৃটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসন। তিনি সব দলকেই তাদের কর্মকাণ্ড বিবেচনার আহ্বান জানান। বলেন, দেশের জাতীয় স্বার্থের আরও ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ করা উচিত।
রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর একতরফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ওপর নতুন নির্বাচন দেয়ার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছিল। শেখ হাসিনার ওপর আন্তর্জাতিক চাপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত সরকারের ওপর কঠোর ও অধিক কার্যকর চাপ দেয়া, যাতে তারা সমঝোতা ও সংলাপে আসে।