৫২ খেলাধুলা ডেস্ক।।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ভারতকে ৪৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শুভসূচনা করল নিউজিল্যান্ড। ১২৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১ বল বাকি থাকতেই ভারতের ইনিংস গুটিয়ে গেছে মাত্র ৭৯ রানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি ভারতের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারত অলআউট হয়েছিল ৭৪ রানে।
মঙ্গলবার ভারতের নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের প্রথম বলে ছয় মেরে দারুণভাবে শুরু করেছিলেন মার্টিন গাপটিল। কিন্তু তার পরের বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে এই কিউই ওপেনারকে। মাঠের আম্পায়ার ভারতীয় ক্রিকেটারদের আবেদনে সাড়া দিলেও টিভি রিপ্লেতে অবশ্য দেখা গেছে যে সেটি আউট ছিল না। পরের ওভারে কলিন মুনরোকেও সাজঘরমুখী করেছেন আশিস নেহরা। তৃতীয় উইকেটে ২২ রানের জুটি গড়ে কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়েছিলেন কেইন উইলিয়ামসন ও কোরি অ্যান্ডারসন। কিন্তু সপ্তম ওভারে উইলিয়ামসনকে আউট করেছেন সুরেশ রায়না। দ্বাদশ ওভারে রানআউটের ফাঁদে পড়েছেন রস টেলর (১০)। কিউইদের পক্ষে প্রায় একাই লড়ছেন অ্যান্ডারসন। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪২ বলে ৩৪ রান করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে লুক রনকির ১১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১২৬ রানের পুঁজি গড়ে নিউজিল্যান্ড।
ভারতের পক্ষে অশ্বিন, আশিস নেহরা, বুমরাহ, সুরেশ রায়না ও রবিন্দ্র জাদেজা একটি করে উইকেট নেন। এর মধ্যে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান করে দেন বুমরাহ ও রায়না।
কোহলি-রায়না-ধাওয়ান-রোহিত-ধোনিদের নিয়ে গড়া ভারতের দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপের সামনে নিউজিল্যান্ড যখন মাত্র ১২৭ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল, তখনই ভারতের জয় অবধারিত বলে ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু ম্যাচ শেষে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৪৭ রানের বড় ব্যবধানের জয় তুলে নিল নিউজিল্যান্ড।
প্রথম ওভারেই শিখর ধাওয়ানকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন নাথান ম্যাককালাম। তৃতীয় ওভারে ভারতকে জোড়া ধাক্কা দিয়েছেন মিচেল সান্টনার। এক ওভারেই তুলে নিয়েছেন রোহিত শর্মা ও সুরেশ রায়নার উইকেট। পঞ্চম ওভারে যুবরাজ সিংকেও সাজঘরে ফিরিয়েছেন ম্যাককালাম। পঞ্চম উইকেটে ১৩ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন কোহলি ও অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু নবম ওভারের প্রথম বলেই কোহলিকে আউট করে এই জুটি ভেঙেছেন সোধি। কোহলি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন ২৭ বলে। পরের ওভারে হার্দিক পান্ডেকেও সাজঘরে পাঠিয়েছেন সান্টনার। পরের ওভারে রবীন্দ্র জাদেজাকেও শূন্য রানে আউট করেছেন সোধি। সেসময় ভারতের স্কোর ছিল ৪৩/৭। হারটাও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তখনই। তবে অষ্টম উইকেটে ৩০ রানের জুটি গড়ে ভারতকে বড়সড় লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন অধিনায়ক ধোনি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রানের ইনিংস খেলে ধোনি আউট হয়েছেন ১৮তম ওভারে। পরের ওভারের প্রথম বলে আশিস নেহরাকে বোল্ড করে ভারতের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়েছেন অ্যাডাম মিল্ন।
কিউই স্পিনার সান্টনার চার ওভার বল করে মাত্র ১১ রানের বিনিময়ে চারটি উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। ১৮ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন অপর স্পিনার সোধি।
২০০৭ সালে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। এছাড়া সর্বশেষ ২০১৪ সালের রানার্স আপ তারা। কিন্তু নিউজিল্যান্ড এখন পর্যন্ত ফাইনালে উঠতে পারেনি। ইতিহাস বলছে, টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ জেতেনি ভারত। আবার ইতিহাস বলছে দেশের মাটিতে কেউ কখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেনি। এ অবস্থায় সব ইতিহাসকে বদলে দিতে মাঠে নেমেছিল ধোনি বাহিনী। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৭ রানে হেরে ইতিহাস বদলাতে ব্যর্থ হল টিম ইন্ডিয়া।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.