ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেই দেশের প্রযুক্তিনির্ভর নীতিগুলো আর বিশ্ব পরিকল্পনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, বিশেষ করে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আর মহাকাশ অভিযানে। তাই ট্রাম্পের দুইবারের প্রেসিডেন্সির পর প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের সম্ভাব্য পরিণতিগুলোর কিছু আভাস এই প্রবন্ধে দেওয়া হল।
বর্তমান বাইডেন প্রশাসন এআইয়ের নতুন নীতিশাস্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, যা তথ্য গোপনীয়তা আর উচ্চ জোখিমের জায়গাগুলোতে এআইয়ের দায়িত্বপূর্ণ ব্যবহারের ওপর জোর দেয়। কিন্তু ট্রাম্পের অধীনে, এআই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গী ইলন মাস্কের সহযোগিতায় এআইয়ের নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবহারের পদক্ষেপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিধিনিষেধ কমলে প্রযুক্তির পরিসর বাড়তে পারে, তবে এর সঙ্গে নানা ধরনের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
বিস্তৃত নজরদারি আর ডেটা ব্যবহার: ওয়েবসাইটগুলো এখন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কুকি সংগ্রহের মতো কাজগুলো করে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণহীন এআই শিশুদের অ্যাপ আর ডিভাইস থেকে আরও আক্রমণাত্মকভাবে তথ্য সংগ্রহ করবে। এআই সংস্থাগুলো ব্যক্তিগত অনুমতি ছাড়াই আচরণগত ডেটা ব্যবহার করতে পারবে, যা সন্তানদের ওপর পিতামাতার নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেবে।
নিরাপত্তা থেকে উদ্ভাবনের দিকে মনোযোগ: ব্যবসায়-বান্ধব প্রশাসনের সহযোগিতায় সংস্থাগুলো শিশুদের ডেটা নিরাপত্তার বিনিময়ে প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য এআই অ্যালগরিদমগুলো অপটিমাইজ করা হবে, কিন্তু নৈতিক ব্যবহার বা বিকাশমূলক প্রভাব নিয়ে খুব কমই নজরদারি থাকবে।
যা পিতামাতাদের জানা দরকার: ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ কিংবা এশিয়ার তথ্য গোপনীয়তা আইন দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকায় পিতামাতাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পর্কে সক্রিয় হওয়া জরুরি। অ্যাপ এবং ডিভাইসের বিভিন্ন সেটিংস ও অনুমতিগুলো কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি। কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে তা জানতে হবে। একসময় স্বাভাবিকভাবে মানা গেছে এমন গোপনীয়তার সীমাগুলো এখন বিশেষ পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে তরুণদের রক্ষা করা যায়।
ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যা মাস্কের ব্যবসাগুলোকে বিশেষ সুযোগ দেবে। মাস্কের সংস্থাগুলো যেমন স্পেসএক্স ও টেসলা, সরকারের সঙ্গে বড় বড় চুক্তি পেয়েছে। এতে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই জোট সরকারি নীতির ওপর মাস্কের প্রভাব বাড়িয়ে দিতে পারে। মহাকাশে আধিপত্যের জন্য স্পেসএক্স-এর সঙ্গে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতা চলছে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি বেসরকারি মহাকাশ উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত, যা ইলন মাস্কের মহাকাশ অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিলে যায়। স্পেসলিঙ্কের মতো স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক শিগগিরই বৈশ্বিক কোয়ান্টাম যোগাযোগ গঠন করবে।
এই জোটের কারণে মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের একক প্রভাব বাড়তে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো মাস্ককে সরকারি চুক্তি এবং সম্পদ বাড়াতে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে। সেই সঙ্গে স্পেসএক্স মহাকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম করবে। ফলস্বরূপ, মাস্ক যোগাযোগ এবং এআই পরিষেবাগুলোর জন্য অপরিহার্য স্যাটেলাইটগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ পাবেন, যা বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে।
স্পেসলিঙ্কের মাধ্যমে কোয়ান্টাম যোগাযোগ: মহাকাশে নিরাপদ কোয়ান্টাম প্রযুক্তির যোগাযোগ চ্যানেলগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে তথ্য নিয়ন্ত্রণে নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। এটি বৈশ্বিক তথ্য প্রবেশাধিকারের প্রভাব ফেলবে। অন্যান্য দেশ ইলন মাস্কের মালিকানাধীন নেটওয়ার্কগুলোর ওপর নির্ভরশীল হতে পারে, যা তথ্য সুরক্ষাকে সরকারি নজরদারি থেকে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে সরিয়ে দেবে।
পরিবারের ওপর প্রভাব: মহাকাশ অবকাঠামোর বেসরকারীকরণের কারণে যখন তথ্য এবং যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কয়েকটি কর্পোরেশনের হাতে চলে যায়, তখন এটি বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত এবং শিক্ষামূলক তথ্যে প্রবেশাধিকার প্রভাবিত করবে। পিতামাতাদের বৈশ্বিক তথ্যপ্রবাহে বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর প্রভাব নিয়ে চিন্তা করা উচিত। পাশাপাশি শিশুদের ডিজিটাল গোপনীয়তা এবং অধিকারগুলোর ওপর যেকোনো ধরনের প্রভাব নিয়ে সচেতন থাকা উচিত।
যেহেতু এআই উন্নত হচ্ছে, তাই এটিকে চালানোর জন্য শক্তির চাহিদাও বাড়ছে, বিশেষ করে যখন প্রযুক্তি সংস্থাগুলো পারমাণবিক এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। ট্রাম্পের বেসরকারীকরণের প্রতি আগ্রহ প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে (য